মূল আইডিয়া হলিউড সিনেমা ‘See The Man Run’ হলেও ‘হেরা ফেরি’ আমাদের কেন ভাল লাগে !!

"three men laughing and talking on the telephone"

এই ‘কেন’ এর উত্তর এক লাইনে দেয়া মুশকিল। তবে তার আগে একটু অন্য আলাপে যেতে চাই, হেরা ফেরি সিনেমা তৈরি হওয়ার আগের আলাপে।

হেরা ফেরি নামে কোন সিনেমা তৈরি হওয়ার কথা ছিল না। প্রোডিউসার ফিরোজ নাদিয়াদওয়ালা ‘রাফতার’ নামের একটি সিনেমা বানাতে চেয়েছিলেন।

এই মানুষটার নাম নাদিয়াদওয়ালা হওয়ার কারণ ছিল। তার পূর্বপুরুষ ভারতের গুজরাটের নাদিয়াদ গ্রাম থেকে এসেছিলেন, সেখান থেকেই এই নাম।

রাফতার

সিনেমার কাস্ট হিসেবে ফিরোজ ঠিক করেছিলেন সঞ্জয় দত্ত, অক্ষয় কুমার, পরেশ রাওয়াল ও কারিশমা কাপুরকে। রাফতার শব্দের অর্থ গতি। একটি হলিউড সিনেমা রিমেকের ইচ্ছে ছিল আসলে ফিরোজের ৷

বুদ্ধিমান আর সিনেফাইল পাঠকের বুঝে যাওয়ার কথা আমি কোন সিনেমার কথা বলছি। জি হ্যাঁ, কিয়ানু রিভসের বিখ্যাত সিনেমা Speed।

ডিরেকশনের অফার শুরুতে গিয়েছিল মহেশ ভাটের কাছে। তিনি না করায় এরপরে সেটি যায় প্রিয়দর্শনের কাছে।

রাফতার সিনেমা শুরুর আগে তার মহরতেই এলাহি আয়োজন হয়েছিল। বলিউডের খুব কম সেলেব ছিল যারা এই মহরতে আসেন নাই।

অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে সালমান খান, শাহরুখ খান, ঐশ্বরিয়া- কে ছিল না?! রাজনৈতিক নেতারা পর্যন্ত এসেছিলেন। তবে সব আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন হলিউডের অভিনেতা স্টিভ্যান সিগ্যাল।

অনেকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, চোখের সামনে তারা এই নাইন্টিজের একশন স্টারকে দেখতে পাচ্ছেন! রাফতার সিনেমায় সিগ্যালের একটি ক্যামিও দেয়ার কথা ছিল ছিল। সুপার হাইপড অবস্থা যাকে বলে রিলিজের আগেই।

আসা যাওয়া

হাইপের জন্য বা বাজার গরমের জন্যই যে এই সিনেমা শুরুর আগেই এত আয়োজন, তা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জানা গেলো৷ শুরুতেই সঞ্জয় দত্ত এই সিনেমা থেকে বেরিয়ে গেলেন ৷

কোর্টে নিয়মিত হাজিরা দেয়ার কারণে সঞ্জয় দত্ত বলেছিলেন, তিনি শুধুমাত্র রাতে শুটিং করতে পারবেন, দিনে না।

শুনে ফিরোজের মাথায় হাত! এভাবে শুটিং হয় নাকি? সঞ্জয় স্বেচ্ছায় বেরিয়ে গেলেন আর নিজের জায়গায় সুনীল শেঠির নাম সাজেস্ট করে গেলেন ৷

কারিশমা কাপুর বেঁকে বসলেন এবার। তার ক্যারেক্টরের সেভাবে কোন গুরুত্ব নেই বলে সিনেমাকে না বলে দিলেন। দৃশ্যপটে এলেন টাবু।

শুরুতে নাদিম শ্রাবণ জুটির মিউজিক করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আনু মালিকের কাছে গেলো দায়িত্ব।

হেরা ফেরি

ওদিকে প্রিয়দর্শনের কোন আইডিয়া ছিল না তিনি কী বানাবেন ?! স্পিডের রিমেক কেন বানাতে হবে সে ব্যাপারেও তিনি কোন সদুত্তর বের করতে পারেন নি।

অনেকেই যখন সিনেমাকে না বলছে আর তার বদলে সিনেমাতে নতুন নাম যুক্ত হচ্ছে, এর ফাঁকে প্রিয়দর্শন সিনেমার লিড তিন হিরোকে একটি কমেডি সিনেমার আইডিয়া শোনান।

তিনজনের বেশ পছন্দ হয় এই আইডিয়া। হওয়ার কারণও ছিল অবশ্য।

এর আগ পর্যন্ত নাইন্টিজে সেভাবে সফল কমেডি সিনেমা হয় নি। আন্দাজ আপনা আপনা নামে একটি কাল্ট কমেডি সিনেমা হয়েছিল তবে সেটির বক্স অফিস পারফরম্যান্স দেখে বেশিরভাগই আর কমেডি সিনেমা বানানোর দু:সাহস করেন নি ৷

দুই ধরনের সিনেমার চল ছিল- রোমান্টিক আর একশন। অক্ষয় আর সুনীল একশন করতে করতে একপ্রকার ক্লান্ত ছিলেন। তার উপর আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে সংঘর্ষ আর জানোয়ার বাদে অক্ষয়ের বাকি সিনেমাগুলো ব্যবসা করেনি।

পরেশ অপরদিকে সিনেমাতে ভিলেন করতে করতে ক্লান্ত ছিলেন। তিনজনেই কোন একটা চেঞ্জ চাচ্ছিলেন, এজন্যই হেরা ফেরির আইডিয়া শুনেই হ্যাঁ বলে দেন।

সিনেমার তিন লিড হ্যাঁ বলার কারণে প্রোডিউসার ফিরোজ নাদিয়াদওয়ালা শেষ পর্যন্ত ‘স্পিড’ বানানোর স্পিড কমিয়ে হেরা ফেরিতেই স্থির হন।

রিলেটিবিলিটি

হেরা ফেরি আমাদের ভালো লাগার অন্যতম কারণ হচ্ছে এর রিলেটিবিলিটি। প্রতিটা ক্যারেক্টরের সাথে রিলেট করা যায় এখনও।

দেখলেই মনে হয়, এ ধরনের ক্যারেক্টর আমরা কোথাও না কোথাও দেখেছি আর এরা এই সিচুয়েশনে এই ধরনের আচরণই করে।

দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, এই সিনেমার ড্রাই হিউমার বা ডেডপ্যান হিউমার। স্ল্যাপস্টিক কমেডির ধারেকাছেও না গিয়ে, কোন রকমের উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি বা বিশেষ করে মুখভঙ্গি না করে, একদম সরল ভঙ্গীতে যে এভাবেও মানুষকে হাসানো যায়, তা এর আগে দেখা যায়নি বহুদিন।

উদাহরণ দিলে আরও পরিষ্কার হবে। হেরা ফেরির তিন লিড ক্যারেক্টার কেউ সেই অর্থে ‘লোভী’ না। কিন্তু তারা টাকা চায়, তাদের প্রয়োজনেই চায়।

নিজেদের এই যাপিত জীবন নিয়ে তারা ক্লান্ত, তারা শুধুমাত্র একটু ভালো থাকার উদ্দেশ্যে টাকা চায় আর মিথ্যা বলে। সেটা চাকরি হারানো শ্যাম হোক, পুরনো গ্যারেজের মালিক বাবুরাও হোক বা নিজের মাকে ক্রমাগত মিথ্যা বলে যাওয়া রাজু হোক।

তাদের এই উদ্দেশ্য তাদেরকে অনেক রিলেটেবল করে দর্শকের সাথে।

একটি দৃশ্যে খেয়াল করবেন, অক্ষয়ের সাথে সুনীলের মারামারির পর সুনীল বলে, আমি তোকে এজন্য মেরে ফেলি নাই কারণ আমি জেলে যেতে ভয় পাই।

আমি তোকে এজন্য মারি নাই কারণ আমি একদিন নিজেকে চাকরি করা অবস্থায় দেখতে চাই।

যেকোনো বেকার যুবক এই দৃশ্য দেখলে কানেক্ট করবেন আর ইমোশনাল হয়ে যাবেন।

অক্ষয়ের ক্যারেক্টরকেও দেখেন, দিনের পর দিন তিনি মিথ্যা বলে যাচ্ছেন কারণ তিনি শুধুমাত্র তার মাকে খুশি দেখতে চান, দ্যাটস ইট।

পুরো দুনিয়ার কাছে, বাবুরাওয়ের কাছে, শ্যামের কাছে তিনি ছোট হতে রাজি, নিজের বকেয়া বাড়ি ভাড়ার জন্য ঝাড়ি খেতে রাজি- জাস্ট নিজের মায়ের সামনে তিনি নিজের মাথাটা উঁচু রাখতে চান আর মায়ের মুখে দেখতে চান আকর্ণবিস্তৃত হাসি।

ডেডপ্যান

ডেডপ্যানে আসি এবার। হেলমেট পরে কিডন্যাপারদের সাথে ডিল করতে যাওয়ার সময় পরেশ রাওয়াল বারবার বাড়ির খুঁটিতে ধাক্কা খেয়ে উল্টে পড়ে যান বেশ কয়েকবার।

একে তো তিনি তখন মদ্যপ, তার উপরে কালো হেলমেটের কালো গ্লাসের কারণে কিছু দেখতে পারছেন না। এই অবস্থায় একজন সাধারণ মানুষ যে ধরনের রিএকশন দেবে, বাবুরাও সেটাই দিয়েছিলেন বাড়তি কিছু না করে।

ফলাফলবশত বাবুরাও ক্যারেক্টর হয়ে যায় বলিউডের ওয়ান অফ দ্য ফাইনেস্ট আইকনিক ক্যারেক্টরদের একটি। পরেশ রাওয়াল বেস্ট এক্টর ইন এ কমেডি রোলে ফিল্মফেয়ারও পেয়েছিলেন এই রোলের জন্য।

হেরা ফেরির মেকিং খেয়াল করলে বেশ উল্লেখযোগ্য পার্থক্য দেখবেন, বিশেষ করে এই সিনেমার দ্বিতীয় কিস্তি ফির হেরা ফেরির সাথে তুলনা করলে।

হেরা ফেরির বেশিরভাগ শট স্ট্যাটিক শট। ক্যামেরার দৌড়াদৌড়ি কম। প্রিয়দর্শনের ইন্টারভিউতে পড়েছিলাম, সিনেমার বেশিরভাগ সিনে তিনি সাদা রংটিকে রেখেছিলেন ক্যারেক্টরগুলোর ইনোসেন্স তুলে ধরার জন্য।

রাজুর শার্ট হোক বা বাবুরাওয়ের পোষাক বা শ্যামের পোশাক। সেটা না থাকলে গ্যারেজের গাড়ির রঙ সাদা। অর্থাৎ কোথাও না কোথাও সাদার ব্যবহার। কিংবা বাবুরাওয়ের খুলে যাওয়া ধুতির রং 😂

সিক্যুয়েল

ফির হেরা ফেরি একদম উল্টো সিনেমা। স্ট্যাটিক শট কম, মুভিং শট বেশি। উইয়ার্ড ক্যামেরা এংগেলও ছিল কিছু কিছু সিনে। তবে সবচেয়ে সমস্যা যেটা হয়েছিল, বাবুরাওয়ের ক্যারেক্টর আর্কটা হারিয়ে গিয়েছিল যা আমরা হেরা ফেরিতে পেয়েছিলাম।

সেকেন্ড পার্টে বাবু রাওকে একদম বোকাসোকা এক ব্যক্তির চরিত্রে দেখানো হয় যেখানে ফার্স্ট পার্টে তিনি ছিলেন সহজ সরল আবার একই সাথে বিজ্ঞ এক ব্যক্তি।

ফার্স্ট পার্টে তার বিজ্ঞতা প্রকাশ পায় তার একটি ডায়লগে- সুখ ভাগ করলে বাড়ে আর দু:খ ভাগ করলে কমে।

এরকম একটা ডায়লগ আপনি ফির হেরা ফেরির বাবু রাওয়ের মুখে শুনবেন না।

সিনেমাটা কিছুটা ওভার দ্য টপ ছিল, রিয়েলিস্টিক ভাবটা চলে গিয়েছিল অনেকটাই। তবে ব্যাপারটা সহনীয় পর্যায়ে ছিল মোটামুটি আর এক্টরদের পারফরম্যান্সের কারণে উতরে যায়।

যার ফলে দ্বিতীয় কিস্তি বেশ সফল হয় বক্স অফিসে।

বক্স অফিস

হেরা ফেরিতে ফেরত আসি। সিনেমার শুটিং শুরুর আগে যে পরিমাণ ঝামেলা হয়েছিল, সিনেমা রিলিজের পরেও ঝামেলা কম হয়নি৷

সিনেমার মেকিং পদ্ধতি নিয়ে ডিরেক্টর প্রিয়দর্শন আর প্রোডিউসার ফিরোজের মাঝে বেশ কথা কাটাকাটি হয়েছিল।

প্রিয়দর্শনের মতে, সিনেমাতে আলাদা করে দুটো গান যে যুক্ত করা হয়েছে, সেটা আমি হলে গিয়ে সিনেমা দেখার আগ পর্যন্ত জানতামই না।

আমাকে কেন বলা হল না? ডিরেক্টরের কোন মূল্য নাই নাকি আজকাল?

ঐদিকে ফিরোজের বক্তব্য ছিল, প্রিয়দর্শন বেশ বোরিং একটা ফিল্ম বানাচ্ছিলেন ৷ গান না দিলে দর্শক যতটুকু এসেছে সেটাও আসতো কিনা সন্দেহ!

আর তার পরিচালনা ভালো হলেও সিনেমার স্ক্রিপ্টে মেইনলি যিনি ইনপুট দিয়েছিলেন, তিনি হলেন নিরাজ ভোরা। তার জন্যই সিনেমাটি রামাজি রাও স্পিকিং থেকে অনেক জায়গায় আলাদা হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হেরা ফেরি সিনেমাটি ১৯৮৯ সালের সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমা রামাজি রাও স্পিকিং এর রিমেক। আবার মূল আইডিয়াটা নেয়া হলিউড সিনেমা See the man run থেকে ৷ এভাবেই বিনিময় প্রথার মাধ্যমে (!) সমৃদ্ধ হয়েছে অনেক সিনেমা।

ডিরেক্টর আর প্রোডিউসারের ঝগড়া চলতে থাকুক, আমরা অন্য আলাপে আসি। সাড়ে সাত কোটি বাজেটে বানানো হেরা ফেরির ওপেনিং ভালো ছিল না।

একশন স্টারদেরকে হুট করে কমেডিতে ট্রান্সফরমেশন তখনকার দর্শক নিতে পারেন নাই, তবে আশার ব্যাপার হচ্ছে, সিনেমাকে কেউ খারাপ বলেন নাই।

এই খারাপ না বলার পরিমাণটা আস্তেধীরে বাড়তে থাকে অর্থাৎ পজিটিভ ওয়ার্ড অফ মাউথ আসতে থাকে। সেকেন্ড উইকের শেষে গিয়ে সিনেমার ব্যবসা ভালো হতে থাকে।

ওভারসিস কালেকশন

শুধুমাত্র ইন্ডিয়াতে এই সিনেমা ২০ কোটির কাছাকাছি বিজনেস করে ৷ সিনেমার পজিটিভ ওয়ার্ড অফ মাউথ দেখে প্রোডিউসার সিনেমাকে কানাডা সহ আরও অন্যান্য জায়গায় রিলিজ করান।

জানলে অবাক হবেন, বিদেশে ভালো ব্যবসা করা কমেডি সিনেমার মধ্যে হেরা ফেরি ছিল শুরুর দিকে। ওয়ার্ল্ডওয়াইড প্রায় ২১ কোটির মত কালেকশন আসে এই সিনেমার, দিনশেষে বক্স অফিস ইন্ডিয়ার ভার্ডিক্ট আসে- এভারেজ।

এভারেজ ভার্ডিক্ট এলেও হেরা ফেরি একটি ব্র‍্যান্ডে পরিণত হয় আর এর দ্বিতীয় কিস্তি বানানোর জন্য প্রোডিউসার উঠেপড়ে লাগেন ৷

প্রিয়দর্শনের না

প্রিয়দর্শনকে বলার পর তিনি না করে দেন কারণ তার মতে, হেরা ফেরির যে ম্যাজিক ছিল তা আর দ্বিতীয়বার রিক্রিয়েট করা সম্ভব না। ফলাফলবশত প্রথম পার্টের ডায়লগ রাইটার নিরাজ ভোরাকেই ডিরেকশনের দায়িত্ব দেয়া হয় দ্বিতীয় কিস্তির।

প্রথম পার্টের rawness না থাকলেও নিরাজ বেশ উপভোগ্য একটি সিনেমা বানান, এর ক্রেডিট কিছুটা হলিউড সিনেমা Lock, stock and two smoking barrels কেও দিতে হয় 😉

অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, ফির হেরা ফেরির রিলিজের দিনে প্রিয়দর্শনের আরেকটি সিনেমা রিলিজ হয় যার নাম ছিল, চুপ চুপকে।

সিনেমা হিসেবে আর ন্যাচারাল কমেডিতে চুপ চুপকে বেটার সিনেমা বা প্রিয়দর্শনের সিগনেচার স্টাইলের সিনেমা হলেও, বেশি ব্যবসাসফল হয় একই দিনে রিলিজ পাওয়া ফির হেরা ফেরি! আইরনি আর কাকে বলে!

মিম

হেরা ফেরির ডায়লগ, ক্যারেক্টর কতটা আইকনিক পর্যায়ে চলে গেছে, তা বোঝা যায় যে কোনো মিম পেজে গেলে।

খোপড়ি তোড় সালেকি কিংবা পাচ্চিস দিন মে পেয়সা ডাবল যে কত জায়গায় কতভাবে ইউজ করা সম্ভব, সেটা দেখিয়েছে এই ইন্টারনেটের যুগ।

অনেক মিমার্সেদের সংসার চলে সম্ভবত শুধুমাত্র হেরা ফেরির ডায়লগের মিম বানিয়ে। একটা সিনেমা কতটা আইকনিক আর রিলেটেবল হলে এটা সম্ভব শুধু তাই ভাবি!

তৃতীয় কিস্তি

২৩ বছর আগে রিলিজ হয়েছিল হেরা ফেরি। অনেকবার হেরা ফেরি ৩ এর ঘোষণা এলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। অবশেষে অনেক জল্পনা কল্পনা আর কার্তিক আরিয়ানের থাকা কিংবা না থাকার পর, অবশেষে মূল কাস্টকে নিয়েই হচ্ছে হেরা ফেরি এর তৃতীয় কিস্তি।

যদিও আশায় গুঁড়েবালি করার জন্য ডিরেক্টরের নামই যথেষ্ট- নোলান থুক্কু ফরহাদ সামঝি! এই পরিচালকের হিউমার নিয়ে বেশি কিছু বলা একদিক থেকে প্রিয়দর্শনকে অপমানের সামিল।

তিনি এখন কী করেন এই ক্লাসিক সিরিজের, সেটা সময়ই বলবে।

ফিরোজ নাদিয়াদওয়ালা

শেষ করছি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি তথ্য দিয়ে। প্রোডিউসার ফিরোজ নাদিয়াদওয়ালা সবসময়ই চেয়েছিলেন, নিরাজ ভোরাই ডিরেকশন দেবেন হেরা ফেরি ৩ বানানো হলে।

অন্য কাউকে দায়িত্ব দেয়ার কথা কখনও ভাবেন নাই তিনি, অন্য কেউ এই সিনেমার সাথে জাস্টিস করতে পারবে- সেটা কখনোই মনে হয়নি তার।

সবকিছুই ঠিকঠাক হচ্ছিল, কিন্তু হুট করে ভীষণ অসুস্থ হয়ে যান নিরাজ ভোরা। নিরাজের বাবা মা অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন, স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন। তাদের কোন সন্তান সন্ততি ছিল না।

প্রোডিউসার ফিরোজ নাদিয়াদওয়ালা নিজের বাসার একটি রুমকে ICU এর একটি অত্যাধুনিক ওয়ার্ড বানিয়ে ফেলেছিলেন, শুধুমাত্র নিরাজের চিকিৎসার জন্য।

জীবনের শেষ নি:শ্বাস ত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি নিরাজের পাশে ছিলেন; কোন ধরনের হেরা ফেরি করেন নাই।

প্রোডিউসাররা বেশিরভাগ সময় টাকা আর প্রফিটের কথা চিন্তা করলেও, দিনশেষে সব প্রোডিউসারকে সম্ভবত এক পাল্লায় মাপা ঠিক হবে না ৷ তার উদাহরণ ফিরোজ নাদিয়াদওয়ালা।

"two men with sunglasses on their faces in front of a colorful background"
No Comments Yet

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Verified by MonsterInsights